বিনোদন এবং স্বল্প সময়ের ভিডিওতে নিজেদের প্রকাশ করার জন্য চমৎকার মাধ্যম হিসেবে পরিণত হয়েছে রিলস ও টিকটক। তবে, এর ব্যবহারের এমন কিছু দিক আছে, যা নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন।
সময় নষ্ট
রিলস বা টিকটকের কোনো ভিডিওতে কোনোভাবে যদি একটায় ক্লিক করা হয়, না চাইতেও যেন পরেরগুলোও দেখা হয়৷ একটি ভিডিও শেষ হলেই আরেকটি দেখতে ইচ্ছে জাগে। এই ‘আর একটা’ দেখতে গিয়ে কয়েকশ ভিডিও দেখে ফেলা সময়ের নিদারুণ অপচয় ঘটায়।
মনোযোগ নষ্ট ও ব্রেইনে ক্ষতিকর প্রভাব
একের-পর-এক নতুন ভিডিও এবং মিউজিকের বেশ প্রভাব পড়ে ব্রেইনে। ক্ষণস্থায়ী ভিডিওর ধারাবাহিকতা মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। স্বল্প সময়ে অনেক বেশি ভিডিও দেখার ফলে ব্রেইন অতিরিক্ত ডোপামিন হরমোন রিলিজ করে। বেশি মাত্রায় ডোপামিন রিলিজের কারণে ব্রেইন অশান্ত থাকে। এর ফলে কোনো কাজ নির্বিঘ্নে করা যায় না। সবসময় অস্থিরতা কাজ করে। দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ব্যবহার মস্তিষ্কের সৃজনশীলতা ও চিন্তাভাবনার ক্ষমতাকে কমিয়ে দিতে পারে। দীর্ঘসময় ধরে কাজে ফোকাস করার ক্ষমতা হারিয়ে যায়। তাছাড়াও বেশিক্ষণ স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকার কারণে চোখের সমস্যা, মাথাব্যাথা কিংবা ঘুমের সমস্যাও হয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম পাইক্স পিক-এ প্রকাশিত আর্টিকেলে উঠে এসেছে যে, ফেসবুক, টিকটক কিংবা ইউটিউবের এসব রিলসে অভ্যস্ত ব্যক্তিরা কোনো কাজে দীর্ঘক্ষণ মনোযোগ দিতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রের কলরাডো কলেজের সাইকোলজি ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ড. কারা গ্রিনের মতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী এসব ফিচারে অভ্যস্ত হয়ে পড়লে একটা সময় মানুষ মানসিকভাবে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
অশ্লীলতা ও হারাম উপকরণ
কিছু ভিউ আর লাইকের জন্য রিলস-এ অশ্লীল ও আপত্তিকর বিষয়বস্তু ছড়িয়ে দেওয়া হয়। বিনোদন হিসেবে তোমরা এসব দেখো। কিন্তু এই কুরুচিপূর্ণ কন্টেন্টগুলো কীভাবে তোমাদের মানসিকতা নষ্ট করে দেয়, তোমাকে পশু বানিয়ে ফেলে, তা তুমি টেরও পাও না। এই কন্টেন্টগুলোই ধীরে ধীরে তোমাকে নিয়ে যায় অশ্লীলতার চূড়ান্ত পর্যায়ে।
পাগলও নিজের ভালো বোঝে। নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরো না। সামনে এ থেকে মুক্তির পথ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
[ষোলো সপ্তম সংখ্যায় প্রকাশিত]