কীভাবে অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করব? (২য় পর্ব)

মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা যখন প্রথম চাকরি পায়, বংশের মুখ তখন উজ্জ্বল হয়। বাবা-মার জন্য এ যেন এক গৌরবগাঁথা বিজয়। সারাজীবনের কষ্টের অবসান হবে এই আশায় তাদের হৃদয় পরিতৃপ্ত হয়ে যায়। সন্তানরাও নিজেরা আবেগাপ্লুত হয়ে বলে থাকে, ‘আমার বাবা-মা সারাজীবন আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছেন, বাকি জীবনে তাদের আর কষ্ট করতে দেব না।’ বাবা-মায়েরা সারাজীবন যে বোঝা এতদিন বহন করেছে, এখন বোঝাটা ঘাড়বদল হয়ে সন্তানের কাঁধে এসে পড়ে।

নিম্নবিত্ত পরিবারের বাবা-মায়েদের আশা থাকে তাদের সন্তান বড় হয়ে বিরাট বড়লোক হবে। দেশ-বিদেশে নামডাক হবে, দামি গাড়ি করবে, আলিশান বাড়ি করবে। বাবা-মা আগে থেকে নিজেদের ছেলেমেয়েদের নাম রাজা-রানিদের নামে রেখে দেয়—বাদশাহ, সম্রাট, নুরজাহান, মমতাজ, আকবর, জাহাঙ্গীর ইত্যাদি। বড়লোক হওয়ার পরে নাম নিয়ে হীনমন্যতায় যাতে না ভুগতে হয়।

চাকরিজীবি সন্তানের খুশির সংবাদে প্রতিবেশীর  বাসায় দই-মিষ্টি নিয়ে যায়, পিতামাতার কলিজা বড় হয়। বাবা-মা সারাজীবনের লালিত স্বপ্ন এখন অনেক কাছ থেকে হাতছানি দেয়। কী আনন্দ!

সন্তান প্রতিমাসের খরচ এবং সর্বনিম্ন হাতখরচ রেখে, বাবার কাছে টাকা পাঠায়। বাবা-মায়ের অনায়াসে মাস চলে যায়। মাস যায়, বছর যায়। জীবন আপন গতিতে চলতে থাকে। 

চাকরির বয়স বাড়ে, বেতন বাড়ে। সেই সাথে বাড়ি ভাড়া বাড়ে, চালডাল তরি-তরকারির দাম বাড়ে, সবকিছুর খরচ আগের চেয়ে বেশি। এ জন্য আগের চেয়ে বাড়িতে বেশি টাকা পাঠাতে হয়। তবুও কেমন যেন টানাটানি। আগে তো এর চেয়ে অবস্থা আরও ভাল ছিল। বাবা সন্তানকে ফোন করে চাকরির কেমন চলছে জানতে চায়। সুযোগ-সুবিধা কেমন বাড়ছে, উপরি-ইনকামের ব্যবস্থা আছে কিনা জানতে চায়। প্রতিবছর প্রমোশনে যে পরিমাণ বেতন বাড়ে, তা এখন যথেষ্ট নয়। তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন—একটা বাড়ি। স্বপ্ন সত্যি করতে হলে ইনকামের অঙ্কটা একটু বাড়াতে হবে। সঞ্চয়ী হতে হবে।

প্রতি মাসে কিছু কিছু করে টাকা করে বাড়ির কাজটা শুরু করতে হবে। সন্তান এবার অধিক পরিশ্রম করে ভাগ্যের চাকা বদলাতে চেষ্টা করে। আয়ের বিকল্প পথ খুঁজে। দুই টাকা খরচ কমিয়ে জমা করার চেষ্টা করে। কোথায় দুই পয়সা বেশি ইনকাম করা যায় সবসময় সেই চেষ্টা করে থাকে। খরচ আরও কমাতে হবে, এক পয়সাও অপচয় করা যাবে না। আগের মাসের চেয়ে এই মাসে বেশি টাকা পাঠাতে হবে। কিন্তু আগের চেয়ে বেশি টাকা পাঠালেও বাবা-মার সেই হাসিমুখ এখন নেই।

কয়েক বছর হাড়খাটা পরিশ্রম করে যে টাকা জমা হয়েছে তা বাড়ি করার জন্য কিছুই না। এভাবে অগ্রসর হলে আগামী ৩০ বছরেও বাড়ি করা হবে না। আমার বাবা-মা স্বপ্নের বাড়ি কি সত্যি সত্যি দেখে যেতে পারবে? চিন্তায় সন্তানের রাতে ঘুম আসে না।

কী করা যায়, কী করা যায়? তোমার বাবার বন্ধু একটা ভালো আইডিয়া দিয়েছে—হাউজ লোন। গত কয়েকদিন ধরে তোমার পরিবার তোমাকে নানাভাবে বুঝানোর চেষ্টা করছে লোন নিয়ে নেওয়ার জন্য। মাসে মাসে কিছু কিছু করে লোন পরিশোধ করে দিলে একসময় লোন শোধ হয়ে যাবে। তোমার বাড়িটা থেকে যাবে। একবার বাড়িটা হয়ে গেলে সারাজীবনের জন্য নিশ্চিন্ত। একটা এসেট হয়ে গেল, সবসময় কাজে লাগবে।

কিন্তু কিস্তি! ওটা হয়ে যাবে—তোমাকে এভাবেই বুঝানো হয়েছে। এত চিন্তা-ভাবনা করে সবকিছু করা যায় না।

তোমার লাইফস্টাইল আগের চেয়ে অনেক করুণ। খরচের লিস্টে নতুন আইটেম যোগ হয়েছে—হাউস লোন। ধার-দেনা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।

তোমার অনেক পরিশ্রম বেড়েছে, আয় বেড়েছে। কিন্তু অভাব কমেনি, আগেও টানাটানি ছিল এখনও তাই। তুমি এক জটিল চক্করে ঘুরপাক খাচ্ছ। দারিদ্রের দুষ্টচক্রে আটক পড়েছ। সারাজীবন এই ইঁদুর দৌড় দৌঁড়াতে হবে, যদি না তুমি উত্তরণের পথ জানো।

“কীভাবে আমি এই চক্র থেকে বের হব”—এমন বোধোদয় যদি তোমার হয়, তাহলে পরের অংশটা তোমার জন্যই।

চলো, একটা এক্সারসাইজ দিয়ে শুরু করি।

এই মুহূর্তে যদি তোমার ইনকাম দ্বিগুণ করে দেওয়া হয় তাহলে কী করবে? আপনার কল্পনায় যে জিনিসগুলো আসছে একটি কাগজে লিখে ফেলো।

এবার তোমার আকাঙ্ক্ষিত বস্তুগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করা যাক।

তোমার আকাঙ্ক্ষা কী ছিল?

  • কিছু ধার-দেনা আছে, ঐগুলি পরিশোধ করতে হবে।
  • আরেকটু ভালো দেখে বাসা ভাড়া নেওয়া দরকার।
  • সোফাসেটের কাভারগুলো চেঞ্জ করতে হবে।
  • পর্দাগুলোর রং নষ্ট হয়ে গেছে, চেঞ্জ করতে হবে।
  • অনেক দিন ধরে ওভেনটা নষ্ট, ঠিক করানো দরকার।

ধরো, তোমার ইনকাম তিনগুণ হয়ে গেছে। এবার কী লাগবে তোমার?

  • একটি ওয়াশিং মেশিন খুব দরকার।
  • একটি বড় স্ক্রিন এলইডি টিভি খুব শখ ছিল।
  • বিয়ের পর থেকে গিন্নিকে ভালো কিছু দেওয়া হয় না। একটা গলার হারের খুব শখ ছিল বেচারির।
  • যদি সম্ভব হয় আগের বাইকটা সেল করে নতুন সিভিজেটটা নেব।

ধরো, তোমার ইনকাম এখন পাঁচগুণ। এবার কী করবে?

  • আব্বা-আম্মার বহুদিনের স্বপ্ন একটা বাড়ি করার।
  • একটা গাড়ি হলে কী যে সুবিধা হতো! পাবলিক ট্রান্সপোর্টে আর কতদিন?
  • ছোটবেলা থেকে দার্জিলিং এ ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছে। সারাজীবন কেবল টিভিতেই দেখলাম, বাস্তবে দেখা হয়নি কখনো।

ওকে, আমাদের এক্সারসাইজ শেষ। তুমি খেয়াল করেছ, তোমার চাহিদাগুলোর একটা প্যাটার্ন আছে। তুমি যে স্তরেই থাকো, সেখান থেকে আরও বেশি খরচের একটা তালিকা আগেই তৈরি হয়ে যায়। এমনকি এই সবগুলোই তোমাকে ঋণের দিকে ধাবিত করে। একাউন্টিংয়ের ভাষায় এটিই হচ্ছে লাইয়াবিলিটি।

কেন গরিবরা কেবল গরিব হয়, আর ধনীরা আরও ধনী হয়? কারণ, গরিবদের লাইয়াবিলিটি বেশি, যেখানে ধনীদের এসেট বেশি এই সিম্পল জিনিসটা বেশিরভাগ মানুষ ধরতে পারে না

চলো, এসেট এবং লাইয়াবিলিটি আরেকটু ব্যাখ্যা করা যাক।

এসেট : খুব সাধারণভাবে বললে, এসেট হচ্ছে যা তোমার পকেটে টাকা এনে দেবে। এমনকি এজন্য তোমাকে কোনো কষ্ট করতে হবে না। ধরো, তুমি একটি ছাগলের খামারে বিনিয়োগ করেছ; যেখান থেকে মাসে ১০-১৫ হাজার টাকা ইনকাম হয়। কাজেই এটি একটি এসেট। তোমার কোনো ইন্টিলেকচুয়াল প্রপার্টি থাকতে পারে। যেমন: তোমার লেখা কোনো বই, কোনো সফটওয়্যার, কিংবা এফিলিয়েট ওয়েবসাইট  – এইগুলো সবই তোমার এসেট। এসেটের শর্ত হচ্ছে, এটি তোমার হয়ে কাজ করে ইনকাম জেনারেট করবে।

লাইয়াবিলিটি : যা তোমার পকেট থেকে টাকা বের করে দেবে তাই লাইয়াবিলিটি। খুব সহজ সাদামাটা সংজ্ঞা দিলাম। যেমন : তোমার কার লোন, যেখানে প্রতিমাসে টাকা গুনতে হয়। কাজেই এটি লাইয়াবিলিটি। ফ্ল্যাট বুকিং দেওয়ার সময় তোমার বাবাকে বলা হয়েছে, ফ্ল্যাট একটি মূল্যবান এসেট। কথা সত্যি। তবে এটি তোমার বাবার এসেট না, ডেভেলপার কোম্পানি কিংবা ব্যাংকের এসেট। হ্যাঁ, তোমার বাবার বাড়ি ব্যাংকের এসেট। মাঝে মাঝে অনেক বাড়ির সামনে সাইনবোর্ড ঝুলে, এই বাড়িটি অমুক ব্যাংকের অমুক শাখার নাম দায়বদ্ধ। বুঝতে পারছ, কেন এই কথা লেখা থাকে?

অনেক একাউন্টেন্ট হয়তো আমার এই সংজ্ঞার সাথে একমত হবেন না। আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষদের বোঝানো। কোনো একাডেমিক সংজ্ঞা না দিয়ে যতটুকু বলা দরকার ততটুকুই বললাম এখানে।

গ্রাফটি লক্ষ্য করো। ওপরের দিকে ইনকাম এবং এক্সপেন্স নিচের দিকে এসেট এবং লাইয়াবিলিটি। গরিবদের ক্যাশফ্লো সবসময় ইনকাম টু এক্সপেন্স। তারা যা ইনকাম করে পুরোটাই খরচ করে ফেলে। তারা কাজ করলে খায়, না করলে না খেয়ে থাকতে হয়।

মধ্যবিত্তদের ক্যাশফ্লো ইনকাম টু লাইয়াবিলিটি টু এক্সপেন্স। মধ্যবিত্তদের ইনকাম ভালো থাকা স্বত্ত্বেও তারা সচ্ছল হতে পারে না। কারণ, তাদের লাইয়াবিলিটি বেশি। মধ্যবিত্তদের সারাজীবন স্ট্রাগল করতে হয় শুধু তাদের কোনো এসেট না থাকার কারণে।

এবার ধনীরাদের ক্যাশফ্লো দেখো। ইনকাম টু এসেট (রিপিট) টু ইনকাম টু লাইয়াবিলিটি টু এক্সপেন্স। ধনীরা ইনকামকে এসেটে কনভার্ট করে যেখান থেকে আবার ইনকাম হয়। এইটাই মূল ম্যাজিক। এবং এই শ্রেণির লোকদের লাইয়াবিলিটি সবসময় কম থাকে।

এবার বুঝতে পারছ, কেন ধনীরা আরও ধনী হয়? কেন গরিবরা আরও গরিব হয়? কেন মধ্যবিত্তরা সারাজীবন স্ট্রাগল করে?

আমরা সারাজীবন টাকা-পয়সার টানাটানি থেকে এই কারণে বের হতে পারি না যে, আমাদের ইনকাম কম। না, আমাদের ইনকাম খারাপ না, কিন্তু আমরা জানি না কীভাবে টাকা-পয়সা ম্যানেজ করতে হয়।

আমাদের ফিনান্সিয়াল আইকিউ একেবারেই শূন্য। কারণ, আমাদেরকে ফিনান্সিয়াল ব্যাপারগুলো কোথাও শেখানো হয় না। আমাদের স্কুল-কলেজে এবং পরিবার থেকে শেখানো হয় কীভাবে পড়াশোনা করে ভালো চাকরি অর্জন করতে হবে। কিন্তু কীভাবে টাকা-পয়সা ম্যানেজ করতে হয়, কিভাবে টাকা-পয়সা আমাদের হয়ে কাজ করে আরও টাকা-পয়সা উপার্জন করে দেবে, এ ব্যাপারে আমাদের কোনো জ্ঞান নেই। ভার্সিটি পাশ করা বেশিরভাগ গ্রাজুয়েটদের চেয়ে মুদি দোকানদারদের ফিনান্সিয়াল আইকিউ বেশি থাকে।

বেশিরভাগ মানুষ লসের ভয়ে ইনভেস্ট করতে চায় না। তাদের ধারণা রিস্ক নেওয়া ঠিক নয়। কিন্তু তোমার ব্যবহৃত স্মার্টফোন, টিভি, ফ্রিজ এগুলোও তো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই রিস্ক তো তুমি ঠিকই নিয়েছ। এসেট করার জন্য ইনভেস্টমেন্ট কোনো রিস্ক নয়। সবচেয়ে বড় রিস্ক হচ্ছে আমাদের অর্থনৈতিক অজ্ঞতা। কোনো ব্যবসায় ইনভেস্ট করার জন্য যে পড়াশুনা থাকা দরকার আমাদের তা নেই।

ভার্সিটি থাকাকালীন আমার এক বন্ধু আমাকে শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিল।[1] কিন্তু শেয়ার কেনাবেচা সম্পর্কে আমার বিন্দুমাত্র ধারণা নেই। আমার বন্ধুর কাছে আমি এই ব্যাপারে জানতে চাইলাম। সে আগ্রহ সহকারে বুঝাতে শুরু করল, “শেয়ার দুই প্রকার। প্রাইমারি শেয়ার, সেকেন্ডারি শেয়ার। প্রাইমারি শেয়ারে ইনভেস্ট করলে লস নেই, তবে লাভ খুব সামান্য। সেকেন্ডারি শেয়ারে লাভ বেশি, বড় বড় লোকজন সেকেন্ডারি শেয়ার কেনাবেচা করে। আমাদের প্রাইমারি শেয়ার দিয়ে শুরু করতে হবে। তারপর সেকেন্ডারি শেয়ারে যেতে হবে।” ব্যস এতটুকুই।

আমি প্রশ্ন করলাম, “শেয়ারের দাম কখন কমে, কখন বাড়ে?” সে উত্তর দিল, “তুমি শুরু করো, আস্তে আস্তে সব বুঝতে পারবে।”

আমি আবার প্রশ্ন করলাম, “কোন ধরনের শেয়ার কিনলে বেশি লাভ হবে?” সে বলল, “আমার এক বড় ভাই আছেন, উনি অনেক দিন ধরে এই লাইনে আছেন। উনিই সবকিছু ঠিক করে দিবেন, আমাদের কিছুই করতে হবে না।”

যে বিষয়ে আমার বিন্দুমাত্র ধারণা নেই সেখানে কী করে ইনভেস্ট করব। এটাকে কি আমরা রিস্ক বলব? এটা স্রেফ লটারি ছাড়া কিছু না। রিস্ক এবং ফিনান্সিয়াল এডুকেশন দুইটা দুই জিনিস।

কিছু লক্ষ্যণীয় বিষয় :

  1. অধিক ইনকাম কখনোই টাকা-পয়সার সমস্যার সমাধান করতে পারে না। অর্থনৈতিক বুদ্ধিমত্তাই কেবল তোমাকে দারিদ্রের দুষ্টচক্র থেকে মুক্তি দেবে।
  2. ইনকামকে যতটা সম্ভব এসেটে কনভার্ট করতে হবে। তাহলে এসেট তোমাকে প্রতিনিয়ত ইনকাম তৈরি করে দেবে।
  3. গরিবরা টাকার জন্য কাজ করে। পক্ষান্তরে, টাকা বড়লোকদের জন্য কাজ করে।
  4. ইনভেস্টমেন্ট কোনো রিস্ক নয়, যদি তুমি জানো কীভাবে রিস্ক হ্যান্ডেল করতে হবে।
  5. অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি চাইলে ভয় এবং লোভ – এই দুইটি নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য মুছে ফেলতে হবে।

টাকা-পয়সার ইমোশনালি সিদ্ধান্ত না নিয়ে ব্রেন থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।


[1] বর্তমানে শেয়ার মার্কেটে সুদ, হারাম পণ্যের লেনদেনসহ অনেক হারাম অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তাই শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট না করাই সঠিক সিদ্ধান্ত।


by

Tags: