ছোটবেলা থেকেই মাসুদের স্বপ্ন, অনেক নাম কামাবে। তার বয়স আজ বিশ। কিন্তু সে এখনো কোনো খ্যাতি অর্জন করতে পারেনি। কদিন নিউজফিড স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ তার সামনে ভেসে উঠল পরিচিত এক মুখ। এ তো তার বন্ধু শাহেদ। ভিডিওটিতে শাহেদ বানরের মতো করে তার হাত পা ছুড়ছে আর কোমর দুলাচ্ছে। ব্র্যাকগ্রাউন্ডে মিউজিক বাজছে, ‘পাছ আও না, সাথ রাহো না’।
মাসুদ দেখল ভিডিওটিতে হাজার হাজার লাইক আর কমেন্ট। সে ফ্রেন্ডের প্রোফাইলে ঢুকল। ফলোয়ার 100K!
মাসুদের মাথা ঘুরে গেল। শাহেদ এত জনপ্রিয় হয়ে গেছে! শাহেদকে নক দিল সে ম্যাসেঞ্জারে।
– বন্ধু, কেমন আছ?
দশ মিনিট পর মেসেজ সীন করল শাহেদ।
– ভালো। তুই?
– এত দেরি করে রিপ্লাই দিলি কেন, শালা!
– রাগ করিস না, বন্ধু। ব্যস্ত ছিলাম। টিকটক করছিলাম। টিকটকে আমি এখন অনেক বড় সেলিব্রিটি। আমার টিকটকে 1M ফলোয়ার!
– তুই এত জনপ্রিয়! কীভাবে সম্ভব! তোর এত ফলোয়ারের রহস্য কী?
– এখন টিকটকে ট্রেন্ড চলছে, শাড়ি বা বোরখা পরে কোমর দুলিয়ে এবং মেয়েদের ভয়েসে লিপসিং করে ভিডিও বানানো।
– তোর লজ্জা করে না এসব করতে?
– লজ্জা করবে কেন? জনপ্রিয় হতে গেলে একটু-আধটু এসব করতেই হয়।
– ওহ, আচ্ছা।
ছয় মাস পর!
শাহেদদের বাড়ির ছাদে শাড়ি পরে এক যুবতী নাচছে। তাকে সঙ্গ দিচ্ছে এক যুবক। আরেক যুবক সেটার ভিডিও শুট করছে। কিছুক্ষণ ধরে বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করছিলাম। এসব বাজে ভিডিও শুট করতে বারণ করার জন্য শাহেদদের ছাদে গেলাম।
ছাদে যাবার পর আমার মাথার ওপর যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। আমি যাকে যুবতী ভাবছিলাম সে আসলে একজন পুরুষ! আরে এ তো আমাদের প্রিয় মাসুদ।
– মাসুদ, তোমার এই দশা কেন? তোমার শরীর ও পোশাকে এত পরিবর্তন কেন?
– ভাইয়া, আমার নাম আর মাসুদ না। আমার নাম এখন এঞ্জেল মাসুদ। আমার এই নামে একটা টিকটক আইডি আছে। আমার 10M ফলোয়ার। আমার ভিডিওগুলোতে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার কইরেন, ভাইয়া।
এক বছর পর।
ব্যস্ত নগরীতে একটা নগ্নমূর্তির নিচে একদল যুবক বসে আছে। ভিন্ন ভিন্ন ধরনের সাইনবোর্ড হাতে। তাদেরকে ক্যামেরায় বন্দী করার জন্য ব্যস্ত কিছু সাংবাদিক ভাইয়েরা। তাদের একটাই দাবি, সমকামিতাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুমোদন দিতে হবে। ভালো করে লক্ষ করে দেখলাম, যুবকদলের মধ্যে মাসুদ সরি, এঞ্জেল মাসুদও রয়েছে।
***
ওপরের গল্পটা কাল্পনিক। তবে বাস্তবতা বিবর্জিত নয়। খুব শীঘ্রই এমন একটা কিছু বাংলাদেশে হতে চলেছে। লূত আলাইহিস সালামের জাতির কথা কি ভুলে গেছি আমরা? কী পরিণতি হয়েছিল তাদের?
তুমি কি ভাবছ বিভিন্ন অমুসলিম রাষ্ট্রে তো এটাকে বৈধ করা হয়েছে। তাদের ওপর তো গজব আসল না। আল্লাহ ছাড় দিচ্ছেন বলে ভাবছ, ছেড়ে দেবেন। আল্লাহ যখন পাকড়াও করবেন, তখন পালাবার পথ পাবে না। আর গজব কি ইতোমধ্যে আসেনি? ওদের পরিবার ও সমাজব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ভয়ংকর রোগব্যাধি, খুন, ধর্ষণ, হতাশা, আত্মহত্যা, একাকিত্ব ওদের কুরে কুরে খাচ্ছে। বৃদ্ধ বাবা-মা একাকী ফ্ল্যাটে মরে থাকে, লাশ পঁচে গলে যায়, তাও কেউ ওদের খোঁজ নিতে আসে না। এগুলো কি আযাব নয়?
তাই এগুলো প্রমোট করা বন্ধ করো। নিজের অজান্তেই তুমি সমকামিতাকে প্রমোট করছ। সতর্ক হও।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা সেসব মহিলাদের ওপর অভিশাপ করেছেন, যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে এবং সে সকল পুরুষদের ওপর অভিশাপ, যারা মহিলাদের বেশ ধারণ করে।’[1] একই হাদীস বর্ণনা করেছেন আবূ হুরায়রা রদিয়াল্লাহু আনহুও।[2] হে ভাই, কেন তুমি এভাবে নিজেকে ছোট করছ? আল্লাহ তোমাকে পুরুষ বানিয়েছেন। তোমার আচার-আচরণ হবে পুরুষালী। কেন তুমি এভাবে নিজেকে অসম্মান করছ?
[1] বুখারি, আস-সহীহ, হাদীস নং : ৪৪২৯
[2] আবূ দাঊদ, আস-সুনান, হাদীস নং : ৪৪৬৯